মোহাম্মদ আরিফ চট্টগ্রাম ব্যুরো:
পটিয়াতে চারুশিল্পী পরিবার এর আয়োজনে ‘শিল্পীর তুলিতে পটিয়া’ শিরোনামে আর্ট ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হয়। ৭ অক্টোবর শনিবার দিনব্যাপী পটিয়ার স্বপ্ননগর চা বাগান এলাকায় এই আর্ট ক্যাম্পে অংশ নেন পটিয়ার ৭৬ জন চিত্রশিল্পী। আর্ট ক্যাম্পের শুরুতে ছবি আঁকা সরঞ্জামাদি তুলে দিয়ে ও ছবি একেঁ আর্ট ক্যাম্পের উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের সাবেক অধ্যাপক ভাষ্কর অলক রায়। অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পটিয়া পৌরসভার সাবেক মেয়র অধ্যাপক হারুনুর রশিদ,চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের সহযোগী অধ্যাপক শিল্পী সুব্রত দাশ, আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন আলোকচিত্রশিল্পী শোয়েব ফারুক,শিল্পী শুভাশিষ দাশ রূপক, ডাক্তার জয়দত্ত বড়ুয়া, সাংবাদিক আব্দুর রাজ্জাক।
আর্ট ক্যাম্প এর সমন্বয়ক আব্দুল্লাহ ফারুক রবির সঞ্চালনায় ও আহবায়ক হামেদ হাসান এর সভাপতিত্বে শুরুতে স্বাগত জানিয়ে বক্তব্য রাখেন আর্ট ক্যাম্প এর শৈল্পিক পরিচালক টিকলু দে। সকাল থেকে একঝাঁক চিত্রশিল্পীদের পদচারণায় মুখরিত হয় পটিয়া উপজেলার খরনা এলাকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে স্বপ্ননগর এলাকাটি।আনন্দ উৎফুল্লতায় শিল্পীরা আঁকেন পাহাড়ের দৃশ্য,পেয়ারা বাগান, লেকের ছবি,স্থানীয় গ্রামীন পরিবেশ, জলধার,পুরোনো মাটির ঘর,চা বাগানের পুরোনো স্থাপনা ও প্রাকৃতিক বিভিন্ন দৃশ্য।
সকাল ১০টায় ছবি আঁকার মাধ্যমে আর্ট ক্যাম্প উদ্বোধন করেন ভাস্কর অলক রায়।তিনি বলেন,,পটিয়ার মত শিল্প সাহিত্যে প্রসিদ্ধ উপজেলায় আর্ট ক্যাম্প এর আয়োজন অত্যন্ত প্রশংসনীয় উদ্যোগ। নতুন প্রজন্মের শিক্ষার্থীরা চারুকলার প্রতি উৎসাহিত হবে। সেই সাথে দক্ষ চিত্রশিল্পী তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।পটিয়া পৌরসভার সাবেক মেয়র অধ্যাপক হারুনুর রশিদ বলেন,বীর প্রসবিনী পটিয়ায় সবসময় শিক্ষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি চর্চার প্রাণকেন্দ্র হিসাবে পরিচিত। আর্ট ক্যাম্প আয়োজন পটিয়ার চিত্রশিল্পীদের দীর্ঘদিনের প্রচেষ্টা প্রতিফলন।এর মাধ্যমে পটিয়াকে সারা দেশের কাছে তুলে ধরা সম্ভব হবে। পটিয়ার নান্দনিক ইতিহাস ও ঐতিহ্য সম্পর্কে দেশের মানুষ আরো বেশি অপরিচিত হবে।আলোকচিত্রশিল্পী শোয়েব ফারুকী বলেন,দক্ষিণ চট্টগ্রামের সাবেক মহাকুমা সদর পটিয়ার গৌরবদীপ্ত ইতিহাস থাকলেও আপাতত তা শূন্যের কোটায় এসে দাঁড়িয়েছে। পটিয়াকে নিয়ে গর্ব করার মতো কিছুই চোখে পড়ে না।পটিয়াবাসীর উচিত গৌরব ফিরে আনার জন্য নান্দনিক পাহাড়ি অঞ্চলে একটা আকর্ষণীয় ইকোট্যুরিজম স্পর্ট এবং বোটানিক্যাল গার্ডেন তৈরি করা।আর্ট ক্যাম্পের সমন্বয়ক আবদুল্লাহ ফারুক রবি বলেন, পটিয়ার নৈসর্গিক সৌন্দর্যের আকর্ষণীয় স্থান চা বাগান এলাকা প্রায় ১৫০ বছর পুরোনো প্রসিদ্ধ জনপদ। পাহাড়,পেয়ারা বাগান,চা বাগানের পুরোনো স্থাপনা, লেক, গাছপালা সমৃদ্ধ মনোরম এ প্রাকৃতিক পরিবেশ যে কোন ব্যক্তিকে আকর্ষণ করবে। তাই সরকারের উচিত এই স্থানকে আকর্ষনীয় পর্যটন স্থাপনা হিসাবে গড়ে তোলা। আর্ট ক্যাম্পের পরামর্শক হিসাবে শিল্পী কাজী মোরশেদ, হামেদ হাসান, কামরুল হাসান,টিকলু দে নয়ন দে,রাজন দে, আকরাম হোসেনসহ সিনিয়র শিল্পীরা। ক্যাম্পে অংশগ্রহনকারী শিল্পীরা সারাদিনে ঐ এলাকার ১১৩ টি ছবি আঁকেন। এই ছবিগুলো দিয়ে পরবর্তীতে প্রদর্শনীর আয়োজন করা হবে। অতিথিরা আর্ট ক্যাম্প এলাকা ঘুরে দেখার পাশাপাশি শিল্পীদের ছবি আঁকা বিভিন্ন বিষয়ে ধারণা প্রদান করেন। পরে ক্যাম্পে অংশগ্রহণকারী শিল্পীদের সনদপত্র বিতরণ করেন।